মজাদার রান্না (হার্ডকভার)
মজাদার রান্না (হার্ডকভার)
৳ ৩০০   ৳ ২৫৫
১৫% ছাড়
Quantity  

১১৯৯ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

Home Delivery
Across The Country
Cash on Delivery
After Receive
Fast Delivery
Any Where
Happy Return
Quality Ensured
Call Center
We Are Here

আমার শৈশবকালে আমরা যখনই পারিবারিকভাবে কোথাও পিকনিক করতে যেতাম খুব ছোটবেলা তেকেই সে সব পারিবারিক পিকনিকে অন্যান্য ছোট মেয়েদের মত ছোটাছুটি না করে, যে জায়গায় বড়রা রান্না করতো সে জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখতাম কিভাবে কি রান্না হচ্ছে। আর সে সময় এখনকার মত বাবুর্চি নিয়ে কেউ পিকনিক করতো না। সাধারণত বাবা, মা, চাচা, চাচিসহ অর্থাৎ বড়রাই একসাথে রান্না করতো। একটু বড় হবার পর আমার মনে আছে ছুটির দিনে আমার বাবা নিত্যনতুন খাবার রান্না করতেন আর আমি তার সহকারি হিসেবে খুব উৎসাহের সাথে রান্নায় সাহায্য করতাম। আমার মা অন্যান্য দিন রান্না করতেন। আমার মাও অনেক মাজার মজার খাবার রান্না করতেন। কিন্তু তার সাথে আমাকে রান্না ঘরে ঢুকতে দিতেন না। কিন্তু মজার মজার খাবার খাওয়ার পর মার কাছে জানতে চাইতাম এটা কি দিয়ে তৈরি হয়েছে। তখন কিন্তু আমার মা রান্নার রেসিপি বলতেন। তাই বলব একেবারে ছোটবেলায় আমার রান্নার প্রতি উৎসাহ শুরু হয়েছিল, বাবা ও মা দু’জনার কাছ থেকেই। একটু বড় হবার পর ভাইবোনের জন্য বিভিন্ন দরনের নাস্তা তৈরি করার মধ্য দিয়ে আমার রান্না শুরু। আমার বড় ভাই সাগর, ছোট ভাই প্রবাল ও ছোট বোন কাকলীর উৎসাহে এটা সেটা রান্না করলেই ওরা বলতো খুব মজা হয়েছে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে আমি রান্না শুরু করি কুব ছোট বয়স থেকেই, আমি যখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। পড়াশোনার সাথে রান্নাকে হবি হিসেবে নিয়েই বড় হলাম। যখন কলেজে পড়তাম সে সময় প্রতি সপ্তাহে ছুটির দিনে সাগর ভাই-এর বন্ধুরা আমাদের বাসায় দল বেঁধে আসতো। দুপুরে আমি রান্না করতাম। ভাল মন্দ যাই হোক সবাই বলতো খুব মজা হয়েছে। তার বন্ধুরা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে আজ বহুল পরিচিত। তাদের মধ্যে আফজাল হোসেন ভাই, আলী ইমাম ভাই, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ভাই, আব্দুল মুক্তাদির মিনু ভাই, ইফতেখার ভাই, সাইখ সিরাজ ভাই, তাহমিনা সাহাবুদ্দিন ছন্দা আপা আরও অনেকে ছিলেন। এরা সবাই আমার রান্নার প্রশংসা করতেন। আমার বন্ধু মহলেও রান্নার জন্য সবাই আমাকে খুব সমাদর করতো। তারপর করেজের গণ্ডি পার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার কিছুদিনের মধ্যেই আমার বিয়ে হয়ে গেল। আমার স্বামী তখন লন্ডনে পড়াশোনা করতো। বিয়ের পর আমি লন্ডনে চলে যাই। বি.এ. পরীক্ষা দিয়ে ওখানে যাবার পর সবাই আমার রান্না খেয়ে বলতো- রান্নাগুলো খুব ভাল হয়েছে। আর সেই সাথে এটাও সবাই বলতো রান্নাগুলো একেবারে অন্যরকম, সবার চেয়ে আলাদা। ইংল্যান্ড থেকে আমরা তারপর আমেরিকার টেক্সসে চলে যাই। সেখানে আমার স্বামীর বন্ধুদের কাছ থেকেও আমার রান্না সম্পর্কে অলিখিত সার্টিফিকেট পেতে শুরু করি। তারপর আমেরিকাতে অনেক বন্ধুদের রান্না শিখিয়েছি। আবার আমারও সুযোগ হয়েছিলো বিদেশী বন্ধুদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের রান্না শেকার। এর মধ্যে আমাদের বিয়ের অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেলো। দেশকে আমি ও আমার স্বামী সব সময়ই ভালবাসতাম। আমার স্বামী মাত্র ১৫ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলো। সেজন্য বেশ কয়েক বছর বিদেশে তাকার পরও আমরা দেশের মায়া কাটাতে পারিনি। দেশে ফিরে এলাম। আমার স্বামী ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আর দেশে ফেরার পর আমাদের মেয়ে সোনালীর জন্ম হলো। সোনালীর জন্মের তিন বচর পর আমার চেলে আকাশের জন্ম হলো। এ সময় কয়েক বছর আমি ওদের নিয়ে জীবনের অন্যরকম একটা সময় পার করলাম। তারপর ওরা একটু কবড় হবার পর টি.ভি. দর্শকদের কাছে আমার প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৯৪ সালে “মাটি ও মানুষ” অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। তারপর আমি বাংলাদেশ টেলিভিমনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করি। সেই সাথে দর্শকদের প্রশংসাও পেতে শুরু করি। এ.টি.এন, একুশে, চ্যানেল আই- এ নিয়মিত রান্নার অনুষ্ঠান করেছি। এর মাঝে আমার রান্নার ৩টি ভি.সি.ডি বের হয়েছে। আমি নিয়মিত কয়েকটি পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে রান্নার উপর লিখছি। যে রান্না এক সময় আমার হবি ছিল সেই রান্না এখন আমার স্বপ্ন। চ্যানেল আই এ রান্নার ‘মনোহর ইফতার’ দিয়ে। আমার রান্নার সিরিজ অনুষ্ঠানটি টিভি দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই আমি টিভিতে রান্নার অনুষ্ঠানের পরিবর্তন আনতে পেরেছি বলে মনে করি। রান্নার সাথে সাথে সে সব খাবার ও রান্নার পুষ্টি সম্পর্কে দর্শকদের অভিহিত করেছেন ড. আসিরুল হক। দর্শকরা সেজন্য অনুষ্ঠানটিকে অন্যরকম রান্নার অনুষ্টান বলে মন্তব্য করেন। রোজার মধ্যে হলেও প্রতিটি অনুষ্ঠান দর্শকরা খুব মনযোগ দিয়ে দেখেছেন ও সেই সাথে এই অনুষ্ঠান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রতি বছর রোজার সময় চ্যানেল আই একমাস ব্যাপী এই রান্নার অনুষ্ঠান প্রচার করে আসছে। ২০০৩ সালে ‘মনোহর ইফতার’-এর ১০০তম পর্ব প্রচারিত হবে। গত একবছর ধরে চ্যানেল আই- এ ঋতুভিত্তিক রান্নার অনুষ্টান ‘বারো মাসের রান্না’ করেছি। এ অনুষ্ঠানটিও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে সিরিজ রান্নার অনুষ্টান করছি যা নাম ‘তীর বাহারি রান্না’। চ্যানেল আইন এর মাধ্যমে আমি গত কয়েক বছরে গ্রামীণ পরিবেশে মাটির চুলায় কয়েকটি অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেয়েছি। অনুষ্ঠানগুলো টি.ভি. দর্শকরা খু্ব পছন্দ করেছেন। রান্নার অনুষ্ঠানে নতুন, কম খরচে দেশী রান্না কিভাবে করার যায় তা দেখবার চেষ্টা করেছি। সেই সাথে খুব সহজে দেশী বিভিন্ন ফল, তরিতরকারি দিয়ে সেগুলো কিভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করা যায় তা দেখাবার চেষ্টা করি। রান্নার অনুষ্ঠান, রান্নার স্কুল, পত্রিকায় লেখা ও সংসার নিয়ে খুব ব্যস্ততার মাঝে দিন কাটাই। এত ব্যস্ততার মাঝেও মুনির ভাই (অনন্যা পাবলিকেশন্স-এর স্বত্বাধিকারী মনিরুল হক) যখন বললেন রান্নার বই লেখার কথা, তখন আমি উৎসাহে ও অনুরোধে এই বইটি লেকার কাজ শুরু করি। এই বই যদি আপনাদের রান্নার কাজে লাগে তাহলে আমার এই বই লেখা সার্থক হবে বলে আমি মনে করি।

ছোটবেলা থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই যাবার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। সেই সাথে বিভিন্ন দেশের রান্না শেখারও সুযোগ পেয়েছি। বাংলাদেশী রান্নাসহ ভারতীয়, মোগলাই, থাই, চাইনিজ, কোরিয়ান, মালয়েশিয়ান, ইন্দোনেশিয়ান, ইটালিয়ান, মেক্সিকান, ইউরোপীয়, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের রান্না শেখার সুযোগ পেয়েছি। সব ধরনের বেকিং রান্নাসহ আমার আরও অনেক দেশের রান্না শিখে আপনাদের সামনে যেন উপস্থাপন করতে পারি সেজন্য দোয়া করবেন।

Title : মজাদার রান্না
Author : কেকা ফেরদৌসী
Publisher : অনন্যা প্রকাশনী
ISBN : 9844123569
Edition : 2016
Number of Pages : 327
Country : Bangladesh
Language : Bengali

কেকা ফেরদৌসী একজন বাংলাদেশি রন্ধন বিশেষজ্ঞ (৪ আগস্ট ১৯৬০) তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ফজলুল হক এবং প্রখ্যাত সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের সন্তান। ২০১১ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে স্বাস্থ্যসচেতন রান্না বইয়ের জন্য 'গুরম্যান্ড কুক বুক অ্যাওয়ার্ডস' লাভ করেন।


If you found any incorrect information please report us


Reviews and Ratings
How to write a good review


[1]
[2]
[3]
[4]
[5]